নবম পে স্কেল সরকারী চাকরিজীবীদের জন্য অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রত ৯ম পে কমিশন গঠন করে ৯ম পে স্কেল প্রদান করা হোক।
নবম পে স্কেল ২০২৪
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে ১ম পে স্কেল গঠিত হয়। এরপর সর্বশেষ ২০১৫ সালে অষ্টম তম বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হয়েছিল। সাধারণত ৫ বছর পর পর সরকার কর্তৃক নতুন পে স্কেল গঠিত হয়েছিল। কিন্তু নবম পে স্কেল প্রায় সাত বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও দেশের অর্থনৈতিক কারণে গঠিত হয়নি।
নবম জাতীয় পে স্কেল
২০২০ সাল থেকে বর্তমান অবধি সারাবিশ্বেই খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের মন্দা চলছে। মহামারী করোনা ভাইরাস সহ রাশিয়া-ইউক্রেনের পরিণতিতে বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটা খারাপ। এর প্রভাব বাংলাদেশের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেললে। সকল পণ্যের দাম রাতারাতি হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে। কিন্তু বাড়ছে না কেবল সরকারি চাকরিজীবী সহ সকল স্তরের চাকরিজীবীদের বেতন। এ নিয়ে সরকারি চাকরিজিবিদের মাঝে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তারা নবম পে স্কেলের জোরদার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সকল পণ্যের দাম ৫০-৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও বাড়ছে না চাকরিজীবীদের বেতন।
নবম পে স্কেল কবে হবে-২০২৪
দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নবম পে স্কেল গঠিত হয়নি। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অষ্টম জাতীয় পে স্কেল প্রণয়ন করা হয়েছিল। বর্তমানে দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতির কারণে সকল সরকারি চাকরিজীবীরা অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত অতিদ্রুত ২০২৩ সালে নতুন পে স্কেল গঠন করা। জাতীয় পে কমিশন সম্পর্কে নবম পে স্কেল সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায় নি।
প্রস্তাবিত পে স্কেল-২০২৪
৯ম পে- স্কেল সম্পর্কে এক কর্মকর্তা বলেন অর্থ বিভাগ এর বাস্তবায়ন শাখা এখন নবম পে স্কেল বাস্তবায়ন এর জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করছেে। ৯ম পে -স্কেল সম্পর্কে তিনি আরো বলেন সরকারের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হলে চলতি অর্থবছরের শেষের দিকে, জাতীয় নির্বাচন এর ঠিক আগে সরকার নতুন বেতন স্কেল ঘোষণা করতে পারে।
জাতীয় পে স্কেলের দাবিসমূহ
পরিষদের দাবিগুলো হলো—১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখা; সচিবালয়ের মতো সকল দফতর, অধিদফতরের পদ-পদবি পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন; টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পুনর্বহাল; বিদ্যমান গ্র্যাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশের স্থানে ১০০ শতাংশ নির্ধারণ করা ও পেনশন গ্র্যাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ; সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ; আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল করে উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা; ব্লক পোস্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করা এবং বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে সকল ভাতা পুনঃ নির্ধারণ করা এবং চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করা।
মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। যেহেতু ইনফ্লেশন বেড়ে গেছে, তাই ক্রয় ক্ষমতা অনুযায়ী এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন যেন বাড়তে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।
সোমবার (১৫ মে) বিকেল সদ্য সমাপ্ত জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৫ সালে আমরা যখন বেতন ভাতা বৃদ্ধি করি, আমরা একটা গবেষণায় দেখেছিলাম যে ইনফ্লেশনের (মুদ্রাস্ফীতি) সাথে সাথে একটা পারসেন্ট হারে বেতন বাড়বে। প্রতি বছরের হিসাব মতে ইনফ্লেশন যত বাড়বে তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা বেতন বাড়াই। অনেক সুযোগও দিয়েছি, বৈশাখী ভাতা থেকে শুরু করে, ফ্ল্যাট কেনার ভাতা, গাড়ি কেনার লোন ইত্যাদি।
তিনি বলেন, যেহেতু ইনফ্লেশন কিছু বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা সেই জায়গায় আবার কতটুকু পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া যায় সেই চিন্তা-ভাবনা করছি। প্রতি বছরের হিসাব মতো ইনফ্লেশন যত বাড়বে তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা বেতন বাড়াব। তাছাড়া অনেক সুযোগও দিয়েছি। বৈশাখী ভাতা থেকে শুরু করে ফ্ল্যাট কেনার লোন, গাড়ি কেনার লোনসহ অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই করোনার সময়, ইউক্রেন যুদ্ধের সময় বাজেট যে করতে পারছি এজন্য ধন্যবাদ জানাবেন। বাজেটের প্রস্তুতি ঠিকঠাক করে দিয়েছি। কোনো অনাথ এসে কী বলছে সেই দায়িত্ব তো আমরা নেব না। আইএমএফ লোন তাদেরকেই দেয় যাদের লোন পরিশোধ করার সক্ষমতা থাকে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এতো অনাথ হয়নি। দেওয়ার মতো সামর্থ্য আছে বলেই আমরা নিয়েছি, এটা বাস্তব কথা।