পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কি আপনার ওজন বাড়াতে পারে?

পর্যাপ্ত ঘুম হলো দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ব্যক্তির বয়স, লেখাপড়া এবং পেশার ধরন এবং শারীরিক প্রতিকূলতার উপর নির্ভর করে দৈনন্দিন ঘুমের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।

4 Min Read
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কি আপনার ওজন বাড়াতে পারে

পর্যাপ্ত ঘুম একজন সুস্থ্য সবল মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজন। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে দিনটা যেমন ঝরঝরে হয় না কাটে ঘুম ঘুম ভাব, তেমনই হজমেও হয় নানা সমস্যা৷ শরীরে অবসাদ ভর করে, শক্তিও কমে যায়৷

একটি ভাল হাসি এবং একটি দীর্ঘ ঘুম ডাক্তারের বইয়ের সেরা নিরাময়

আইরিশ প্রবাদ

সাধারণত, স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত এবং যদি আপনি কোনও সমস্যার মুখোমুখি হন, তবে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলতে হবে।

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কি আপনার ওজন বাড়াতে পারে

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কি হয়?

বিশেষত, যদি আপনার ঘুম কম হয়, তবে খাদ্যের প্রতি কম প্রবণতা থাকতে পারে। এছাড়াও, ঘুমের অভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে, যেমন কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা এবং ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতা।

  1. ক্ষুধা বা পেট ব্যথা: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ক্ষুধা বা পেট ব্যথার কারণ হতে পারে।
  2. জ্বর বা শ্বাসকষ্ট: ঘুম না থাকলে আপনার দেহ তাপমাত্রা উচ্চ হতে পারে এবং এটি জ্বর বা শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে।
  3. উচ্চ রক্তচাপ: নিয়মিত ঘুম না থাকলে রক্তচাপ উচ্চ হতে পারে এবং এটি হৃদয় সমস্যার কারণ হতে পারে।
  4. মনের সমস্যা: ঘুম না থাকলে মানসিক সমস্যার হতে পারে, যেমন দিক্কার সমস্যা, চিন্তা এবং উদাসী হওয়া।
  5. শারীরিক সমস্যা: ঘুম না থাকলে আপনার শারীরিক সমস্যা হতে পারে, যেমন দৌড় দৌড়ানোর ক্ষমতা কমে যাওয়া, মাথা ঘুরে যাওয়া, মাথার ব্যাথা এবং ব্যাকপেইন।
  6. মানসিক সমস্যা: নিয়মিত ঘুম না থাকলে মানসিক সমস্যার সম্ভাবনা থাকে। এটি অস্থিরতা, উদাসী হওয়া এবং ভুলে যাওয়ার সমস্যা উত্পন্ন করতে পারে।
  7. শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যা: নিয়মিত ঘুম না থাকলে শিক্ষার্থীদের জন্য অধ্যয়ন এবং স্কুল করা কঠিন হতে পারে এবং তাদের অধিকার্য পালন করা অসম্ভব হতে পারে।
  8. স্থুলতা অনুভব করা: ঘুমের সমস্যা থাকলে আস্তে আস্তে আপনার শরীরে মেদ জমতে শুরু করে।
  9. ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়াও সম্ভবনা: ঘুমের সমস্যা থাকলে একজন অল্প বয়সের পুরুষের রক্তে চিনির মাত্রা, ক্ষুধা বৃদ্ধির হরমোন ঘ্রেলিনের মাত্রা এবং চাপ বৃদ্ধির হরমোন কর্টিসলের মাত্রা অনেক বেশি৷ যারা পাঁচ ঘন্টা বা তারও কম ঘুমান, খুব দ্রুত তাদের ওজন বাড়ে এবং ওজনের সঙ্গে সমর্কিত রোগ টাইপ-টু ডায়াবেটিসেও আক্রান্ত হন৷

ভালো ঘুমের উপায়

১। নির্দিষ্ট ঘুমঘরের মধ্যে ঘুমান। কম আলোকে এবং শান্ত একটি ঘুমঘরে ঘুমানো উচিত।

২। ঘুমের আগে একটি রিল্যাক্সেশন সেশন করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, একটি হাঁটা দিয়ে কিছু সাফল্য প্রাপ্তির কথা মনে করতে পারেন।

৩। শান্তি ও মনোযোগ বজায় রাখার জন্য পূর্বে কিছু টাইম নিয়ে ঘুমানো উচিত।

৪। শান্তির সাথে ঘুমানোর জন্য উপযোগী গান শোনা উচিত।

৬। পর্যাপ্ত শারীরিক ক্রিয়া এবং একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য আপনাকে ভালো ঘুম উপহার দিতে পারে।

৭। রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ খেতে পারেন। এতে রাতে ঘুম ভালো হবে। দুধে বিদ্যমান অ্যামাইনো অ্যাসিড ট্রিপটোফ্যান ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক।

৮। ডিমে আছে ভিটামিন ডি। মস্তিষ্কে যে অংশের নিউরন ঘুমাতে সাহায্য করে, ডিমের ভিটামিন ডি সেখানে কাজ করে। ভিটামিন ডির ঘাটতি থাকলে সহজে ঘুম আসে না।

৯। কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। তাই কলা খেলে রাতে ঘুম ভালো হয়। 

১০। সবজির স্যুপ, আপেল, বাদাম, কিশমিশসহ অন্যান্য খাবার স্বাস্থ্যকর খাবার নিয়মিত খেতে হবে। 

১১। নিয়মিত শরীরচর্চা করলেও মানসিক অবসাদ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখলে ভালো ঘুম হয়।

সবশেষে, পর্যাপ্ত ঘুম একটি স্বাস্থ্যকর জীবনের মৌলিক অংশ হিসাবে গন্য করা হয়। নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম পাওয়া অনেক উপকারী হতে পারে যেমন স্বাস্থ্য ভাল রাখা, মন শান্ত রাখা, জ্ঞান বৃদ্ধি, ক্রিয়াশীলতা বৃদ্ধি এবং কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি ইত্যাদি। এছাড়াও পর্যাপ্ত ঘুম না থাকলে মনের স্বাস্থ্য ভাল থাকে না এবং নেতৃত্বের দক্ষতা ও ক্রিয়াশীলতার নিম্নতা দেখা যেতে পারে।

Share This Article
Leave a comment